বাংলাদেশি তরুণীর ভারতে গণধর্ষণের শিকার হয়ে দেশে এসে মানবপাচার আইনে মামলা করেছেন। তরুনীটি ভয়ঙ্কর সব তথ্যও দিয়েছেন পাচারকারী ও নিপীড়কদের সম্পর্কে।
তরুণী জানান, টিকটকের মাধ্যমে চক্রটির সঙ্গে তার পরিচয়ের সূত্রপাত। এই চক্রের মাধ্যমে প্রায় দেড় হাজার নারী বিভিন্ন দেশে পাচারের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি ভারতে গ্রেফতার মগবাজারের ‘টিকটক’ হৃদয় বাবু এই চক্রের সমন্বয়কারী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মঙ্গলবার সকালে ওই তরুণীর বরাত দিয়ে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ভারতে পাচার হওয়া কিশোরী নিজের উপর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন পুলিশকে । মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ১২ জনকে আসামি করে মামলায় দায়ের করা হয়েছে।
আরো সংবাদ পড়ুন আমাদের সাইটে http://banglacircular.com
- খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩
- কর কমিশনারের কার্যালয়-ঢাকা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- বেসরকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের ফেব্রুয়ারী ২০২৩ মাসের বেতন ছাড়
- বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়াটার্স এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
আসামিদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশে অবস্থান করছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এরা হলেন- মেহেদী হাসান বাবু, আবদুল কাদের ও তার ছেলে মহিউদ্দিন। এদের মধ্যে মেহেদি একাই এক হাজারের বেশি মানুষকে পাচার করেছেন। বাকি দুজন পাচারে সহায়তা করেন বলে তরুনী জানায়।
হৃদয় বাবু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের এডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কে ৭০-৮০ জনকে নিয়ে ‘টিকটক হ্যাংআউট’ এবং ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের আফরিন গার্ডেন রিসোর্টে ৭০০-৮০০ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়ে পুল পার্টির আয়োজন করে । আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় এই মানব পাচারকারীর চক্রের অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় কৌশলে এ বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় বাউল লালন শাহ মাজারে আয়োজিত টিকটিক হ্যাংআউটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে ভারতে পাচার করে হৃদয় বাবু।
পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ার পর থেকে দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত তার উপর লোমহর্ষক নির্যাতন চালান তারা।
পুলিশের ডিসি শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভারতে পাচারের পর কিশোরীটিকে ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায় পর্যায়ক্রমে কয়েকটি বাসায় রাখা হয়। ওই কিশোরীর সঙ্গে বাসাগুলোতে হাতিরঝিল এলাকার আরো কয়েকজন তরুণী ও কিশোরীর সঙ্গে দেখা হয।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে নির্যাতিত তরুণীও ছিলেন, যাদের সুপার মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারের কর্মী হিসেবে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয় বলে তিনি জানান।
ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ব্যাঙ্গালুরুতে পৌঁছানোর কয়েকদিন পরই ওই ভুক্তভোগী তরুণীকে চেন্নাইয়ের অয়ো হোটেলে ১০ দিনের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে অমানবিক শারীরিক ও বিকৃত যৌন নির্যাতন করা হয় তাকে। সেখানে সামান্যতম দয়া কিংবা করুণা দেখায়নি চক্রের সদস্যরা।
নেশা জাতীয় দ্রব্য কৌশলে খাইয়ে কিংবা জোরপূর্বক বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে পরিবারের সদস্য বা পরিচিতদের পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল তরুণীকে। পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ার পর থেকে পালিয়ে দেশে ফেরা ওই কিশোরীর করা মামলার এজাহারে ও তদন্তে উঠে এসেছে শিউরে উঠারমত লোমহর্ষক বর্ণনা, যা করুণ কাহিনী কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে নির্যাতিত ওই তরুণীর সহায়তায় ভারতে পাচার হওয়া তিনজন দেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। যাদের একজন ভারতে পাচারের ৭৭ দিন পর দেশে ফিরেছেন, তিনিই হাতিরঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বাকি দুইজন ভারতফেরত ভুক্তভোগীর নাম-ঠিকানা জেনে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে বলে পুলিশ জানায়।