মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে পড়ার এ সুযোগ কেনেডি-লুগার ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড স্টাডি বা (ওয়াইইএস) নামের একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা আমেরিকান পরিবারের অতিথেয়তায় লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষ অবস্থান করে আমেরিকান হাইস্কুলে লেখপাড়া করার সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো যা জানা যায়- কেনেডি-লুগার ওয়াইইএস প্রোগামের মাধ্যমে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নের জন্য আবেদন আহবান করা হয়েছে।
ইয়েস বৃত্তি
বাংলাদেশের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত এ কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করেছে। ইয়েস বৃত্তি একটি মেধাভিত্তিক ও উম্মুক্ত কার্যক্রম। এতে বিনা মূল্যে যে কোন শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে ওয়াইইএস প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশের হাইস্কুলের ৮-১১ গ্রেডের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের জন্য বৃত্তি প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ আমেরিকানদের কাছে তুলে ধরারও সুযোগ পেয়ে থাকে। আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ০৪ টা।
আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজনঃ
- শিক্ষার্থীর বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে হতে হবে। ১৫ বছরের ১ দিন কমও নয়, আবার ১৭ বছরের ১ দিন বেশিও নয়।
- বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা কলেজে অষ্টম, নবম, দশম বা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি থাকতে হবে। দেশের বাহিরে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি নাগরিকেরা আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে না।
- ইংরেজিতে কথা বলা ও লেখাপড়ার জন্য ইংরেজি ভাষায় পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে।
- বিগত ০৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে থাকলে তা মোট ৩ মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের বেশি হলে আবেদনের জন্য বিবেচিত হতে পারবে না।
- প্রার্থীর মা–বাবার যে কেউ অথবা উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বা যুক্তরাষ্ট্র মিশনের বর্তমান কর্মী হলে আবেদন করতে পারবেন না।
- আত্মীয় ও পরিবারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনে আবেদনকারী প্রার্থীগণও আবেদনের জন্য যোগ্য হবে না।
- বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশের দ্বৈত নাগরিক বা স্থায়ী অভিবাসী হতে পারবে না।
- জে-১ ভিসার জন্য যোগ্যতার শর্তসমূহ পূরণ করতে হবে (উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা জে-১ ভিসার জন্য যোগ্য নয়।
কি কি যোগ্যতা বৃত্তি প্রাপ্তিতে সহজতর হতে পারেঃ
- একটি শিক্ষাবর্ষের জন্য নিবিড় শিক্ষা কার্যক্রম, সামাজিক সেবাকর্ম ও শিক্ষা সফরে পুরোপুরি অংশ নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা।
- যুক্তরাষ্টের হাইস্কুল জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং ঐ দেশের যে কোনো পরিবারের আতিথেয়তায় থাকার প্রস্তুতি।
- দায়িত্বশীল, পরিণত, স্বনির্ভর, আত্মবিশ্বাসী, চিন্তাশীল, অনুসন্ধানী , মুক্তমনা ও সহনশীল বৈশিষ্ট্য থাকলে।
- নিবিড় শিক্ষা কার্যক্রম, সামাজিক সেবাকর্ম ও শিক্ষাসফরে পুরোপুরি অংশ নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা
- ক্যাম্পাস–জীবনের সঙ্গে সহজভাবে মানিয়ে নেওয়া।
আরো যা থাকছে
- জায়গা ভাগাভাগি করে থাকার প্রস্তুতি।
- নিজ দেশের থেকে ভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক রীতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগ্রহ ও সক্ষমতা।
- আমেরিকার স্কুল ও জনসমাজে বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করার সক্ষমতা।
- কার্যক্রম শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি।
ইয়েস প্রোগ্রামের বিস্তারিত
- আবেদনের বিস্তারিত নির্দেশাবলি জানা যাবে http://www.iearnbd.org/ তে।
- আর আবেদনপত্র https://bd.usembassy.gov/education-culture/student-exchange-programs/–এ পাওয়া যাবে।
ইয়েস প্রোগ্রামের গোড়াপত্তন
ইয়েএস প্রোগ্রাম ২০০২ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ বৃত্তি সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি এবং সিনেটর রিচার্ড লুগারের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য পারস্পরিক আগ্রহের ভিত্তিতে সবার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা এবং ভুল ধারণা বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র ব্যক্তি হিসেবে একে অপরকে সম্মান করা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অর্থায়নে এ প্রোগ্রামটি যুক্তরাষ্ট্রে এক একাডেমিক বছরের বৃত্তিতে থাকা ও পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করে। শিক্ষার্থীরা হোস্ট পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে, উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
আমেরিকান সমাজ ও মান সম্পর্কে জানতে পারে, নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করে এবং তাদের দেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমেরিকানদের শিক্ষিত করতে সহায়তা করে।
৪০টির বেশি দেশ থেকে ১২ হাজারের বেশি প্রাক্তন শিক্ষার্থী রয়েছে ইয়েস প্রোগ্রামের আওতায়। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে ৩৯২ জনের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে গেছে। তারা সবাই ইয়েস অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের একটি অংশ।
ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসোর্স নেটওয়ার্ক–বাংলাদেশ বাংলাদেশে ইয়েস প্রোগ্রামকে সহায়তা করে।
প্রোগ্রামটি তরুণ অগ্রদূতদের নেতৃত্বের শিক্ষা, নাগরিক সমাজের নিয়মনীতি ও সম্প্রদায়ের পরিষেবার যুক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেয় এবং এর দ্বারা তারা তরুণদের ধারণা, মূল্য ও অভিজ্ঞতা তৈরির উৎসাহ দেয়।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো
