রোববার থেকে সারা দেশে নানা আয়োজনে খুলছে প্রতিষ্ঠানগুলো
প্রায় দেড় বছর পর খুলছে স্কুল-কলেজ। দীর্ঘদিন শ্রেণী কক্ষের বাইরে থাকায় শিক্ষার্থীদের মনে প্রভাব পড়েছে। আর তা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবকদের ইতিবাচক আচরণের পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীদের।
শিক্ষকরা বলছেন কোমলমতি শিশুদের শ্রেণিকক্ষে আগ্রহ বাড়াতে রয়েছে নানা পরিকল্পনা। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের মানসিকতা বুঝে আচরণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কোভিডের কারণে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সংক্রমনের হার কমে আসায় দেড় বছর পর সরকার রোববার থেকে স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও ইতোমধ্যেই বদলে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ।
মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ
শিক্ষার্থীদের মনজগতে এসেছে নানা পরিবর্তন তাই শুরুতেই পাঠ্য পুস্তকের বাহিরে গিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীদের মনজগতে আসা নানা পরিবর্তনের ভিত্তিতে ইতিবাচক আচরণের পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীদের। পড়া লেখার পাশাপাশি গ্রাম অঞ্চলে যে এক্সট্রা কারিকুলাম এর একটিভিটিস গুলো আছে সেটা হয়ত নানা রকম সংস্কৃতি চর্চায় খেলাধুলা ইত্যাদি গুলো আমাদের সোস্যাল ইস্কিল ডেবলাপমেন্ট করতে সাহায্য করে।
শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানাবে শিক্ষকরা
ছাত্র ছাত্রীদের স্বাগত জানাতে সাজানো হচ্ছে শ্রেণীকক্ষ। শিক্ষকরা জানালেন ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হবে শিক্ষার্থীদের। সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রমের না গিয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রম এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনোবল আরো দৃঢ় করতে চান তারা। ক্লাস টাকে শিক্ষার্থীরা যেন নিজের ঘর মনে করে।
ক্লাসটাকে যেন ওরা আনন্দময় মনে করে। এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন যখন ছাত্র/ছাত্রীরা প্রবেশ করবে তখন আমাদের রবীন্দ্রনাথের আনন্দ সংগীত বাজবে, এসো আমার ঘরে….. এসো আমার ঘরে…..।
প্রাথমকি ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ কে গুরুত্ব দিয়ে আচরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শিক্ষকদের। শুধু পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসটা সপ্তাহের প্রতিদিন হবে। অন্যান্য ক্লাসগুলো সপ্তাহে একদিন করে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ফুল দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চকলেট দিয়ে ইত্যাদী নানাহ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে স্বাগত জানানো হবে।
চলবে সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম
দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙ্গে রোববার থেকে কোন কলেজে বসছে প্রাণের মেলা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথমদিকেই পাঠ্যপুস্তক ভিত্তিক শিখন কার্য়ক্রমের বেশি চাপ প্রয়োগ না করে শিক্ষার্থীদের মানসিক ধকল কাটাতে সহশিক্ষা মূলক কার্যক্রমের জোর দেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
চলছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ
সরকারি নির্দেশনা মেনে সপ্তাহ দুটি করে ক্লাস নিতে রুটিন তৈরি করেছে স্কুল গুলো। পাশাপাশি চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আর বাকি দুইদিন। শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখরিত হবে আঙিনা।
প্রতিষ্ঠানের আঙিনা ও শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের উপযোগী করতে চলছে পরিচ্ছন্নতার কর্মযজ্ঞ। কর্মচারীদের সাথে পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নিচ্ছেন শিক্ষকেরাও। স্কুলের প্রধান ফটক ক্লাস রুমের সামনে রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা।
এদিকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ছয় ফুটের একটি বেঞ্চে বসবে 2 জন শিক্ষার্থী। এক রুমে থাকবে সর্বোচ্চ 20 জন । সেভাবেই রুটিন করা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা। আর শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন প্রস্তুতি তদারকিতে কাজ করছেন তারাও। একটি ক্লাস যে সময় আসবে অন্য সময় অন্য কোন ক্লাস ঢুকবেনা।
বন্যাকবলিত অঞ্চলে খোলবেনা প্রতিষ্ঠান
এদিকে গ্রাম অঞ্চলে কোন কোন জায়গায় স্কুল প্রাঙ্গনে মাঠ রাস্তাঘাট এখনো বন্যার পানিতে ডুবে থাকা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা। তবে শিক্ষকরা বলছেন সব প্রস্তুতি থাকলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বন্যা।
মানিকগঞ্জের শিবালয় অনেকগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ক্লাসরুম থেকে বন্যার পানি নামলেও আঙিনায় কোমর পানিসহ তলিয়ে আছে টিউবওয়েল টয়লেট। রাস্তাঘাট তলিয়ে শিক্ষার্থীদের কূলে আসা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিদ্যালয় চারদিকে পানি থাকায় বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা।
দীর্ঘদিন করোনার কারনে বন্ধ থাকার পর খোলার খবরে খুশি থাকলেও বন্যার কারণে বিদ্যালয় নির্দিষ্ট সময়ে না খোলায় হরতাল শিক্ষার্থীরা। টিকা সহ সব প্রস্তুতি থাকলেও বন্যার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা জানান শিক্ষকরা।
মানিকগঞ্জ জেলায় হাজার মানুষ পানিবন্দি। জেলার 815 একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের 163 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হয়।