ছিনতাই ও চুরি কিংবা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন পেতে প্রতিদিনই মানুষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়।
অনেকে মোবাইল ফোন সেট ফিরে পেতে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
তবে চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার হয় খুবই কম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল যদি অন্য কেউ ব্যবহার করে তাহলে সহজেই সেটি উদ্ধার করা সম্ভব। তবে সবসময় উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে।

পুলিশ কীভাবে উদ্ধার করে?
গাজীপুর জেলার টঙ্গি পূর্ব থানার এসআই মোঃ রাজীব হোসেন গত এক বছরে ১০০’র বেশি চুরি, ছিনতাই কিংবা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করেছেন।
তার বর্ণনা অনুযায়ী, মোবাইল ফোন ফিরে পেতে ভুক্তভোগীরা যখন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন, তখন সেখানে মোবাইল ফোনের নম্বর, কোন কোম্পানির সেট এবং সেটের আইএমইআই নম্বর উল্লেখ করতে হয়।
অবশ্য কেউ যদি আইএমইআই নম্বর উল্লেখ করতে না পারে তাতেও কোন সমস্যা নেই। ব্যবহৃত নম্বর দিয়েও সেট উদ্ধার করা সম্ভব।
থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর সেটি পাঠিয়ে দেয়া হয় জেলার এসপি অফিস কিংবা মহানগরের ক্ষেত্রে সেটি পাঠিয়ে দেয়া হয় পুলিশের ডিসি অফিসে।
সেখান থেকে বিষয়টি পাঠানো হয় পুলিশ সদরদপ্তরে। এরপর পুলিশ সদরদপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন কোম্পানির কাছে পাঠানো হয় বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য।
বাংলা সর্কুলারে আরো খবর পড়ুন…..
- প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে ছাত্রলীগ সন্দেহে আটক ৩
- বেসরকারি স্কুল শিক্ষকরা নানাভাবে বঞ্চিত: শিক্ষা উপদেষ্টা
- Job Visa from Bangladesh to the USA: A Complete Guide
- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- বাংলাদেশ চা বোর্ডে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
মোবাইল কোম্পানি তথ্য দেবার পর সেটি পুলিশ সদরদপ্তর হয়ে আবার থানায় ফিরে আসে।
চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি দেশের কোন এলাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি চিহ্নিত করার মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ সময় সাপেক্ষ। সেজন্য অনেক সময় খুঁজে পেতে দেরি হয়।
“চুরি হওয়া একটি মোবাইল ফোন পাঁচ থেকে ছয়বার হাতবদল হয়। একটি জায়গায় গিয়ে স্থির হতে ১৫-২০ দিন সময় লেগে যায়।”
ফোনটি সর্বশেষ যে ব্যক্তির কাছে যায় তিনি হয়তো সরল বিশ্বাসে কারো কাছ থেকে ফোনটি কিনে থাকতে পারেন।
সে ব্যক্তি যখন ব্যবহার করা শুরু করে তখন তাকে পুলিশ বের করতে পারে।
“এটা খুঁজে বের করতে একটু বেগ পেতে হয়, একটু কষ্ট করতে হয়।”
সবসময় উদ্ধার করা কি সম্ভব?
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সায়েন্সেস এর ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা সবসময় সম্ভব হতে পারে না।
চুরি বা ছিনতাইকারীদের মধ্যে অনেকেই জানে যে মোবাইল সেটে সিমের সংযোগ দিলেই সেটির অবস্থান চিহ্নিত করা সহজ হবে।
মি. হাসান বলেন, অনেকে সময় চোর বা ছিনতাইকারী মোবাইল ছিনতাই করার পর সেটের সিম এবং ব্যাটারি খুলে ফেলে।
তারপর সে ফোন সেট নিয়ে কোন চোরাই মার্কেটে গিয়ে নেটওয়ার্ক আইসি পরিবর্তন করে ফেলে।
ফোন সেটের নেটওয়ার্ক আইসি পরিবর্তনের মাধ্যমে সেটের আইএমইআই নম্বরও বদলে ফেলা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন মি, হাসান।
আইএমইআই নম্বরটি বদলে ফেললে সে ফোন সেট আর উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।

” আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করলেই সেটি নতুন একটি ফোন সেট হয়। পুরনো কোন ইনফরমেশন সেখানে থাকে না”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতে না পারলে মোবাইল সেটের প্রতিটি যন্ত্রাংশ আলাদা করে বিক্রি করা হয়। তখন ফোন সেট আর ট্র্যাক করা সম্ভব হয়না।
মি. হাসান বলেন, “স্যামসাং-এর ভালো একটা মোবাইল ফোনের ডিসপ্লের দাম ৩০-৪০ হাজার টাকা। ডিসপ্লেটা আলাদা করে বিক্রি করতে পারে। এছাড়া প্রসেসর এবং ব্যাটারিও আলাদাভাবে বিক্রি করা যায়”।